উদ্যোক্তাগন সাধারনত শীর্ণ বাজেট ও আক্রমনাত্মক লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে। তাই, জানান দেওয়া, সচেতনতা তৈরি করা অথবা সম্ভাব্য ক্রেতাকে অফার করার সুযোগটি হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। এ কথা শুনেই অনেকে সৃজনশীল পদ্ধতি খুজে বেড়াচ্ছেন কিন্তু কাস্টমার মনোযোগ পাওয়ার মতো আক্রমনাত্মক কৌশল পাচ্ছেন না। “পুশ মার্কেটিং” (বিক্রয়কর্মী নিয়োগ, বিজ্ঞাপন এবং কাস্টমারকে পুনরায় কল করা) অনুসরন করার পরিবর্তে, মার্কেটাররা এখন নজর দিচ্ছেন “পুল মার্কেটিং” এ। অর্থাৎ যখন কাস্টমার ক্রয় করতে প্রস্তুত, তখন যেন ব্র্যান্ডকে স্মরণ করতে পারে এমন পজিশন এবং রেপুটেশন বিল্ড করা।
পরিক্ষিত কতোগুলো পন্থা বর্ণনা করা হলো:
১. লাগেজ এবং ব্যাকপ্যাক ট্যাগস
উদ্যোক্তা ব্লগের ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ও পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং এক্সপার্ট লিডা সিট্রয়েন বলেন, আমার এক সহকর্মী সবসময়ই ব্যবসায় সম্পর্কিত ইভেন্ট এ উপস্থিত হন আকর্ষনীয় ও কার্মিক ব্যাকপ্যাক নিয়ে। ব্যাগের সামনের অংশটায় কোম্পানির গুনকীর্তন করা হয়েছে লোগো ও ট্যাগলাইন দিয়ে। এবং কৌশলটি কাজে এসেছে: সে বলে যে, প্রায়ই জনসম্প্রদায় থামিয়ে জিজ্ঞেস করতো তার কোম্পানি কী কাজ করে।
তাই লিডাও এই কাজ করা শুরু করে দিলেন: লাগেজ, পার্স ও অন্যান্য ব্যাগে কোম্পানি লোগো এবং ট্যাগলাইন যুক্ত করলেন। লোকজন প্রায়ই জিজ্ঞেস করে ট্যাগলাইনটির মানে কী এবং সে কোথায় কাজ করে। ফ্রি বিজ্ঞাপন।
২. আইপ্যাড, ল্যাপটপ “স্কিন”
সৃষ্টিশীল মার্কেটাররা যখন অভিভাষন দেয়, নিজেদের ল্যাপটপ ও আইপ্যাড ব্যবহার করে। লক্ষ্য করা যায় যে, দর্শককে প্রদর্শিত ল্যাপটপের পিছনের অংশ এ্যাপল এর বিজ্ঞাপন করে দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বিজ্ঞাপনটি দরকার ছিলো নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য। বিষয়টি মাথায় রেখে অনেকেই ল্যাপটপ এর পিছনের অংশটি কাস্টমাইজ করে নিজের কোম্পানির লোগো সেট করে নেন। কথা বলার সময়ও ফ্রি বিজ্ঞাপন হয়ে গেলো।
লিডা বলেন, আমি কী করি তা জানতে কোন ব্যক্তিই যেন বঞ্চিত না হন, তাই আইপ্যাড ও মোবাইল ফোনেও লোগো এবং ট্যাগলাইন লাগিয়ে দেই। এর ফলে, এয়ারপ্লেন এবং এয়াপোর্টেও জিজ্ঞেস করা হয় ব্যবসায়টি সম্পর্কে। কতো সুন্দর কনভার্সেশন স্টার্টার।
৩. ডেস্কটপ স্ক্রিন
প্রেজেন্টেশন প্রস্তুত করা সময়ে পুন:পুন ল্যাপটপ স্ক্রিনে গমন হয়। পরিবারের সাথে ছুটিতে ঘুরতে যাওয়া ছবি প্রদর্শনের পরিবর্তে লিডা সেট করে রাখেন তার সমসাময়িক কোন বইয়ের কভার পেজ অথবা কোন ক্যাপশন। প্রেজেন্টেশন চলা সময়ে দর্শক সাম্প্রতিক অফার সম্পর্কে অবগত হলো।
৪. সামাজিক মাধ্যম
ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউব পর্যাপ্ত পরিমান অবকাঠামো এবং পটভূমি তৈরির সুযোগ দিয়ে রেখেছে। সাইটগুলোর মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিতে পারবেন আপনি কে এবং কী করেন। এমনকি যদি ব্যক্তিগত ব্যবহারেও সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে অবস্থান করেন, আপনি কী করেন তা বন্ধুদেরকে মনে করিয়ে দেয়ার সুযোগটি কেন হাতছাড়া করবেন? প্রোফাইলের কভার ফটোতে প্রিয় পোষাপ্রানির বদলে কোম্পানির লোগো সংবলিত একটি ছবি ঝুলিয়ে দিন।
৫. সামাজিক অনুষ্ঠান
কমফোর্ট যোন থেকে বেরিয়ে আসা মানে কখনও কখনও বর্তমান নেটওয়ার্কের বাইরে বেড়িয়ে আসাকে উৎসাহিত করে। মিডিয়া ও ডিসিশন মেকাররা জমায়েত হয় এমন হাই-প্রোফাইল ইভেন্ট এ অংশগ্রহন করার মাধ্যমে অর্জন করতে পারেন ফ্রি পাবলিসিটি এবং প্রোফাইলকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবেন যেখানে লক্ষনীয় ও প্রসিদ্ধ ব্যক্তিগন আনাগুনা করেন।
৬. অনলাইন রিভিউ
আপনার স্টোরে কাস্টমারদের প্রদত্ত শুধু নেগেটিভ রেসপন্সকেই উত্তর দেবেন না, বরং সব ধরনের কমেন্ট এর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবেন। ইতিবাচক কমেন্টের প্রতিউত্তর দেয়া মানে আপনার কাস্টমারদের প্রতি সচেতন এবং মনোযোগ নিয়োগ করছেন। নেতিবাচক রিভিউ এর রিপ্লাই দেয়া মানে কাস্টমারের খারাপ অভিজ্ঞতার জন্য আপনি সমবেদনা অনুভব করছেন এবং উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। এটাই মহামার্কেটিং।
৭. ভিডিও
ভিডিও ব্যবহারের মাত্রা নিত্ত বেড়ে চলেছে। ইভোডো এর একটি গবেষনায় পাওয়া যায় যে, ৭৫ শতাংশ অনলাইন ট্রাফিক আসবে ভিডিও থেকে। এর অর্থ এই দাড়ায় যে, প্রচলিত মার্কেটিং এর বদলে এখন নজর দিতে হবে ভিডিও মার্কেটিং এর উপর।
ভিডিও প্রকাশের জনপ্রিয় সাইট ইউটিউব আমন্ত্রন জানায় হাই-কোওয়ালিটি এবং সেল্ফ-মেইড ভিডিও। সফল ব্যবসায়গুলো ভিডিও এর মাধ্যমে দেখাচ্ছে তাদের টিমওয়ার্কগুলো, প্রদর্শন করছে পন্যের বিস্তৃতি।
সর্বোপরি বলা যায় যে, বিক্রয়ের প্রধান মন্ত্রটি ছিলো “সবসময় বিক্রির উপর থাকো”। কিন্তু বর্তমন সময়ে বুদ্ধিমান মার্কেটারগন নজর দেন সুনাম ব্যবস্থাপনার এবং পজিশনিং এর উপর।